কক্সবাজার সৈকতে ভয়ংকর ‘রোবট দানব’
স্টাফ রিপোর্টার
আপলোড সময় :
০৪-১২-২০২৪ ০৫:২৩:১৯ অপরাহ্ন
আপডেট সময় :
০৪-১২-২০২৪ ০৫:২৩:১৯ অপরাহ্ন
সংবাদচিত্র : সংগৃহীত
কক্সবাজার সমুদ্রসৈকতে নামতেই চোখে পড়ছে রোবট আকৃতির এক বিশাল দানবের। যার উচ্চতা ৬২ ফুট। এটি বানাতে ব্যবহৃত হয়েছে ১০ টন পরিত্যক্ত প্লাস্টিক। যা কক্সবাজার, ইনানী ও টেকনাফ সমুদ্রসৈকত থেকে পুরোটাই সংগ্রহ করা হয়েছে। ভাস্কর্য শিল্পীদের দাবি, এটি ওসান প্লাস্টিক দিয়ে তৈরি যা বিশ্বের সর্ববৃহৎ রোবট দানব।
কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের সীগাল পয়েন্টের বালিয়াড়িতে দাঁড়িয়ে আছে প্লাস্টিকে তৈরি ভয়ংকর এক দানব রোবট। যে দানবটি রক্ত-মাংসহীন প্রতীকী হলেও যার হিংস্র থাবায় প্রতিনিয়ত ক্ষত-বিক্ষত মানবদেহ, প্রকৃতি ও প্রাণবৈচিত্র্য। সৈকতে ঘুরতে আসা যে কেউ এটি প্রথম দর্শনে মনে ভয় বিরাজ করলেও কাছে যেতেই সে ভয় কেটে যাবে। আর জানবে দানবটির দেহে বয়ে বেড়ানো প্লাস্টিক দূষণে প্রাণ-প্রকৃতির ক্ষতির মাত্রা।
জানা গেছে, প্রবালদ্বীপ সেন্টমার্টিন ও কক্সবাজার সমুদ্রসৈকতের অপরা সৌন্দর্য উপভোগ করতে প্রতিদিনই সমাগম ঘটে লাখো পর্যটকের। যারা সৈকতের বালিয়াড়ি ও সাগরের পানিতে ফেলছেন প্লাস্টিক পণ্য সামগ্রীর বর্জ্য। এতে উদ্বেগজনক হারে বাড়ছে দূষণ এবং হুমকির মুখে পড়ছে সামুদ্রিক জীব ও মানবজীবন। আর প্রাণ-প্রকৃতির দূষণ রোধে ও সচেতনতা সৃষ্টিতে কক্সবাজার জেলা প্রশাসন ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশন নিয়ে প্লাস্টিক বর্জ্যে তৈরি দানব ভাস্কর্যের প্রদর্শনীর মত ভিন্নধর্মী এ উদ্যোগ।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) চারুকলা বিভাগের ভাস্কর ও শিল্পী আবীর কর্মকার বলেন, ‘প্লাস্টিক দিয়ে রোবট দানবটি তৈরি করেছে ঢাবির চারুকলা বিভাগের একদল শিল্পী। এতে তারা প্লাস্টিক বর্জ্যের পাশাপাশি ব্যবহার করেছেন কাঠ, পেরেক ও আঁঠাসহ আরও কয়েকটি উপকরণ। এটির উচ্চতা ৬২ ফুট। এটি বানাতে ১০ টন প্লাস্টিক ব্যবহৃত হয়েছে। বিশাল রোবট দানবের দুপাশে আরও দুটি ছোট রোবট দানব তৈরি করা হয়েছে।’তিনি আরও বলেন, ‘মূলত সমুদ্রে প্লাস্টিক দূষণের ভয়াবহতা সম্পর্কে মানুষকে সচেতন করতে কক্সবাজার সমুদ্রসৈকতে নির্মিত হয়েছে আকাশছোঁয়া বিশাল আকৃতির রোবট দানব।’
বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশনের গভর্নিং বডির সদস্য জামাল উদ্দিন বলেন, ‘বর্তমান সরকারের পরিবেশ মন্ত্রণালয় প্লাস্টিক দূষণের বিরুদ্ধে শক্ত অবস্থান নিয়েছে। সরকারের পলিসির সঙ্গে সমন্বয় করে আমরা সারাদেশ থেকে স্বেচ্ছাশ্রমে ৫০০ টন পরিত্যক্ত প্লাস্টিক রিসাইকেল করার উদ্যোগ নিয়েছি। এতে করে প্লাস্টিক বর্জ্য ম্যানেজমেন্টে সরকারি খরচ যেমন কমবে তেমনি মানুষও জানতে পারবে কীভাবে রিসাইকেলের মাধ্যমে বর্জ্য কে সম্পদে রূপান্তর করা যায়।’তিনি আরও বলেন, ‘দেশব্যাপী এই উদ্যোগের অংশ হিসেবে কক্সবাজারে আমরা জেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় চার মাসব্যাপী প্লাস্টিক দূষণ প্রতিরোধে কাজ করে যাব। প্লাস্টিক বর্জ্য রিসাইকেলের পাশাপাশি এখানে সচেতনতামূলক ভাস্কর্য প্রদর্শনীর আয়োজনও করেছি।’পরিবেশবাদীসহ সচেতন মহল বলছেন, ভিন্নধর্মী এ উদ্যোগ প্রশংসনীয়। এতে মানুষ প্লাস্টিক দূষণের ভয়াবহতা সম্পর্কে অবহিত হবেন।
বাংলা স্কুপ/ প্রতিনিধি/ এনআইএন/এসকে
প্রিন্ট করুন
কমেন্ট বক্স